সরবরাহ বাড়ায় রাজধানীর বাজারে কমতে শুরু করেছে চালের দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন চালে দাম কমেছে অন্তত ৭-৮ টাকা। অন্যদিকে রাজধানীর বাজারে কমেছে সব ধরনের মুরগির দাম। তবে আবারও চড়েছে ডিমের বাজার। ডজন প্রতি দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। শুক্রবার (৯ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
জানা গেছে, রমজানের আগে থেকেই রাজধানীর বাজারে চড়া ছিল চালের দাম। পুরো রমজানজুড়েই ভোক্তাকে ভুগিয়েছে চালের বাজার, বিশেষ করে সরু চাল। তবে চলতি মে মাসের শুরু থেকে দাম কমতে শুরু করেছে চালের বাজারে। ব্যবসায়ীরা জানান, বোরো মৌসুমের নতুন চাল বাজারে আসতে শুরু করেছে। যার প্রভাবে চালের দাম কমছে। মানভেদে নতুন মিনিকেটের প্রতি কেজিতে অন্তত ৭-৮ টাকা এবং মোটা ও মাঝারি চালে কমেছে ২-৫ টাকা পর্যন্ত। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের চাল ব্যবসায়ী রাকিব বলেন, বাজারে নতুন চাল ওঠায় দাম কমতে শুরু করেছে। তবে পুরান চাল আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দাম কমে নতুন মিনিকেট চাল প্রতি কেজিতে ৭৬-৮০ টাকা ও আটাইশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬-৫৮ টাকায়।
তবে চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে প্রতি কেজি পুরাতন মিনিকেট ৮৬-৯০ টাকা, আটাইশ ৫৮-৬২ টাকা, স্বর্ণা চাল ৫৫ টাকা ও নাজিরশাইল ৭৬-৮৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১১৬-১১৮ টাকায়। চালের দাম কমতে শুরু করায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। তারা বলছেন, বাজার এখন নতুন ও পুরাতন চালে ভরপুর। দাম কমায় স্বস্তি ফিরেছে। শামীম হাসান নামে এক ক্রেতা বলেন, চালের বাজারে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে সিন্ডিকেট করে বাজার অস্থির করার সুযোগ না পায়, সেদিকে সরকারকে কঠোর নজর রাখতে হবে।এদিকে গত ১৩ এপ্রিল বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছিলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে বাজারে বোরো ধানের চাল আসবে। নতুন ধান উঠলে চালের বাজার আরও সহনীয় হয়ে উঠবে।
জানা যায়, রাজধানীর বাজারে কমেছে সব ধরনের মুরগির দাম। তবে আবারও চড়েছে ডিমের বাজার। ডজন প্রতি দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। শুক্রবার রাজধানীর নয়াবাজার ও কারওয়ান বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে কমেছে সব ধরনের মুরগির দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে বাড়ছে মুরগির সরবরাহ। এতে কমছে দাম। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মুরগি বিক্রেতা দিদার বলেন, গরমের কারণে খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন দ্রুত। ফলে বাজারে মুরগির সরবরাহ বেড়েছে। এতে সপ্তাহ ব্যবধানে দাম কমেছে কেজিপ্রতি ১০-২০ টাকা পর্যন্ত।বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিতে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত কমে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর কেজিতে ২০ টাকা কমে প্রতিকেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতিকেজি দেশি মুরগি ৬৫০-৬৮০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৭০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়।তবে বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকায় ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়।
এদিকে, ফের অস্থির হতে শুরু করেছে ডিমের বাজার। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ডজন প্রতি দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। দাম বেড়ে প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩০ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ১৮০-২০০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, গরমে ডিম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া গরমে মুরগি মারা যেতে পারে, এই শঙ্কায় অনেক খামারি মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে সরবরাহ কমায় দাম বাড়ছে।
বাংলাস্কুপ/ প্রতিবেদক/এনআইএন